যুবক
প্রতিহিংসার শিকার
২৪ মে কালো দিবস
অমানবিক ৬টি বছর অতিবাহিত
২০১৪ সালকে দায়-দেনা মুক্ত বর্ষ বানানোর প্রতিশ্রুতি
লাখো মানুষের স্বপ্নের সম্মিলন
যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি
যা ঘটেছে এবং যেভাবে ঘটেছে ...
অকস্মাৎ শো’কজ নোটিশ : বিনা মেঘে বজ্রপাত
২০০৬ সালের ২৪ মে তারিখে যুবক এর একটি কার্যক্রমকে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগে শো-ক’জ নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নোটিশটি যুবক কার্যালয়ে বিকাল ৫.৩০ মিনিটে পৌছালেও দি ডেইলি ষ্টার ও প্রথম আলো পত্রিকা থেকে এ বিষয়ে জানার জন্য ফোন করে বিকাল ৪টায়। বিকাল ৫টার মধ্যে ফোন করে দৈনিক যুগান্তর সহ আরো ২/৩ টি পত্রিকা অফিস থেকে। অর্থাৎ ঘটনা ঘটার আগেই রটে গেলো ? তাহলে কি এটা সাজানো ও পরিকল্পিত ?
নেতিবাচক ও আগ্রাসী অপ-প্রচারে মরিয়া হয়ে উঠে কয়েকটি মিডিয়া
এতে কার উপকার হয়েছে- সরকারের ? সদস্যদের ?
তবে পত্রিকার কাটতি বৃদ্ধি পেয়েছিল নি:সন্দেহে ......
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শোকজ নোটিশকে কেন্দ্র করে কয়েকটি মিডিয়া হোলি খেলায় মেতে উঠে। নেতিবাচক ও আগ্রাসী অপ-প্রচারের কারণে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যুবকের এই নোটিশকে ইস্যূ বানিয়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রায় ৪০০টি সংবাদ, ফিচার, প্রতিবেদন ইত্যাদি প্রকাশিত হয়। যুবক-এর কার্যক্রম অবৈধ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক যুবক-এর সকল সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে ইত্যাকার নেতিবাচক প্রচারণা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিষ্ঠানের ইমেজ ক্ষুন্ন হয়। সামাজিক অবস্থান বিনষ্ট হয়। ফলে এর সদস্য, শুভাকাংখি, জনশক্তি সকলেই ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য একযোগে সদস্যপদ প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করে। তাৎক্ষনিক টাকা ফেরত প্রদানের জন্য ক্রমাগতভাবে চাপ দিতে থাকে। শুভাকাংখিগণ ইমেজ আতঙ্কে সম্পর্ক ছিন্ন করে। কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বিনা নোটিশে চাকুরি থেকে ইস্তফা দিতে শুরু করে। এর নেতিবাচক প্রভাব যুবক এর সহযোগী প্রকল্পসমূহকেও গ্রাস করে। এর ফলে সহযোগী প্রকল্পসমূহের নিয়মিত কার্যক্রমও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
মিডিয়ার নেতিবাচক প্রচারণার প্রভাব
১. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নোটিশ জারি এবং কতিপয় মিডিয়ার উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের ফলে যুবকের ক্ষুদ্রঋণ ও প্রকল্প-ঋণ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মাঠে অনাদায়ী হিসাবে আটকে পড়ে প্রায় ১৬৪ কোটি টাকা।
২. যুবক হাউজিং-এর প্লট গ্রহীতারা তাদের মেয়াদি প্রকল্পের মাসিক কিস্তি বন্ধ করে দেয়। প্রকল্পগুলো থেকে মাসিক ১০ কোটি টাকা নিয়মিত কিস্তি আদায় হতো।
৩. যুবক ফোনের নিয়মিত মাসিক সাড়ে ৩ কোটি টাকা আয় বন্ধ হয়ে যায়।
৪. অন্যান্য প্রকল্পগুলোর আরো প্রায় ৫ কোটি টাকার মাসিক নিয়মিত আয় বন্ধ হয়ে যায়।
এ ছাড়াও...
ক) যুবক ফোন-এর ৩০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায় এবং এর ফলে ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ধ্বংসের মুখে পতিত হয়।
খ) আইন-শৃংখলা বাহিনী ধর-পাকড়, তল্লাশী বেড়ে যায়। আতঙ্কে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যায়।
গ) ইমেজ সঙ্কটের পাশাপাশি তারল্য সঙ্কট সৃষ্টি হয়। ফলে সদস্যদের পাওনা পরিশোধ প্রক্রিয়া ও ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হয়।
ঘ) সামরিক সমর্থিত ২০০৭ সালের সরকারের আমলে ডি.জি.এফ.আই ও টাস্কফোর্সের নামে যুবকের বিনিয়োগ আরটিভি সহ অনেক সম্পদ, টাকা ও প্রতিষ্ঠান কেড়ে নেয়া হয়। মামলা-হামলার জন্য সদস্যদেরকে উস্কে দেয়া হয়। এসব নেতিবাচক প্রভাবের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিনিয়োগ সমূহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
ঙ) বিনিয়োগ/পাওনা প্রাপ্তির জন্য সদস্যদের পক্ষ থেকে সম্মিলিত চাপ প্রয়োগ, হামলা, ভাংচুর এবং মামলা করা হয়। সেই সাথে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। তখন গুরুত্বপূর্ণ অনেক ডিড/ডকুমেন্টস লুটপাট হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্বহীন আচরণ :
চাপিয়ে দেয়া অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত
একটি দেশীয় আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সদ্য বিনিয়োগকৃত প্রকল্পগুলোর নিরাপত্তা, গড়ে উঠা ৪২টি কোম্পানী/ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ, ৩ লাখের অধিক সদস্যের বিনিয়োগের নিরাপত্তা, ৫০ হাজার কর্মী, ৩ লাখ পারিবারিক নির্ভরশীলের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা এবং সর্বোপরি দায়শোধের স্বার্থে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সময় প্রদানের ব্যাপারে তৎকালীন মাননীয় গভর্নর বরাবর অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিণতির কথা বিবেচনা না করে যুবক এর উপর চাপিয়ে দেয় অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। ফলে, ধ্বংসের মুখে পড়ে সম্ভাবনাময় অর্ধশত-প্রকল্প, আতঙ্ক ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে নেটওয়ার্কের ৫০ হাজার জনবল এবং প্রায় ৩ লাখ নির্ভরশীল সদস্য।
প্রশাসনিক চাপ ও অসহযোগিতা বৃদ্ধি পায়
শো’কজ নোটিশের পর থেকে ব্যাপক লেখালেখির ফলে আইনশৃংখলা বাহিনীসহ প্রশাসনিক চাপ বেড়ে যায়। অপরপক্ষে সহযোগিতার সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কারও সাহায্য পাওয়া যায়নি। ফলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা আরো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
ঘটনা বহুল ১/১১
তথাকথিত ১/১১ আমলে যুবক কর্মকর্তারাও নির্যাতনের শিকারে পরিণত হয়। যুবকের দূরাবস্থার সুযোগ নিয়ে ডি.জি.এফ.আই এর কতিপয় অসৎ কর্মকর্তার সহায়তায় নাটকীয়ভাবে বিনামূল্যে কেড়ে নেয়া হয় যুবকের Rtv (আর.টি.ভি-র ৫৭% মালিকানা)। এ সময়ে ঢাকা ব্যাংকের লোন ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হয় ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ- টেলিবার্তা লি. (যুবক ফোন)। সামরিক বাহিনী কর্তৃক আর্থিক ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতনে হিতাহিত হয়ে পড়ে যুবক কর্মকর্তাবৃন্দ।
হামলা-মামলা-লুটপাট
তৎকালীন টাস্ক-ফোর্সের কতিপয় বিভ্রান্ত সামরিক কর্মকর্তার ইন্ধনে শতাধিক মামলা করা হয় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের নামে। এ সময়ে ঐসকল বিভ্রান্ত সামরিক কর্মকর্তার ইন্ধনে সদস্যরাও ব্যাপক আকারে যুবক বিদ্বেষী হয়ে আক্রমনাত্মক ভূমিকা নেয়। বিভিন্ন অফিসে হামলা ও ভাংচুর হয়। অফিস থেকে কর্মকর্তাদের বের করে দিয়ে অফিস তালাবদ্ধ করে এবং ডকুমেন্টস লুটপাট করে। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, ডিড, ডকুমেন্টস, মালামাল, কম্পিউটার ও সফটওয়্যার লুটপাট ও অগ্নিসংযোগও করা হয়।
পাওনাদার সদস্যদের মামলা-হামলা ও গ্রেফতার ও নির্যাতনের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আত্ম-গোপন করতে বাধ্য হয় শত-শত কর্মী। নিজ পরিবার পরিজনের সাথে দেখা-সাক্ষাত পর্যন্ত করতে পারেনি। পরিবার পরিজন ছেড়ে যোগাযোগবিহীন ভারসাম্যহীন জীবন যাপনে অতিষ্ট হয়ে নানান অসুস্থতায় ভুগছেন অনেকে। অসুখে-বিসুখে, আনন্দে-উৎসবে এমনকি প্রিয়জনদের মৃত্যু সংবাদ পেয়েও হামলা ও গ্রেফতার আতঙ্কের ভয়ে শেষ দেখাটুকুও সম্ভব হয়না। এমন কষ্টও পাথর চাপা দিয়ে একাকী দিনাতিপাত করেছেন দায়িত্বশীলরা। আজ এখানে তো কাল অন্যখানে। অসংখ্য মামলায় জর্জরিত যুবক পরিবারের প্রায় এক হাজার কর্মকর্তা। কারাবরণ করেছেন অনেকে।
বিপথগামী গ্রুপের উদ্ভব
ইমেজ সঙ্কট, প্রশাসনিক চাপ, অসহযোগিতা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তহীনতায় যুবক পরিবার যখন মুখ থুবড়ে পড়ার অবস্থায়, তখন মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ৫/৬টি পাওনাদার বিপথগামী ফোরাম। স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে প্রলুদ্ধ হয়ে এসব চাঁদাবাজ ফোরাম হামলা-মামলা, অপপ্রচারে ভূমিকা রেখে দায়শোধ কার্যক্রমের গতি আরো শ্লথ করে দেয়। পদে পদে থানা-পুলিশ সহ অসংখ্য এসব বাঁধার মুখে কর্মীরা পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হয়। এসব বিপথগামী গ্রুপ এখনো যুবকের পাওনা পরিশোধ কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্থ এমনকি সরকার গঠিত যুবক কমিশনের কার্যক্রমকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।
মনিটরিং সেল গঠন (২০০৮)
গভীর সঙ্কটের মুখে উদ্বিগ্ন কর্মকর্তা ও দিশেহারা সদস্যদের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পদক্ষেপ হিসেবে গঠন করা হয় মনিটরিং সেল। ৫৩/১ পুরানা পল্টন লেন, রহমত মঞ্জিলে সেলের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করা হয়। প্রায় এক লাখ সদস্যের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়। নগদ পরিশোধের মাধ্যমে দায়শোধের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এখানেও বিপথগামী সদস্যরা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। মনিটরিং সেলের কর্মকর্তাদের হামলা-মামলা ও মারধর করে। পর্যায়ক্রমে আংশিক দায়শোধের প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশেষে একদল বিপথগামী সদস্য মনিটরিং সেলে হামলা চালায়। তথ্য-প্রমাণাদি সহ কম্পিউটার এবং মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। মারধর করে এবং রক্তাক্ত কর্মকর্তাদের অফিস থেকে বের করে দেয়। এরই পরিণতিতে উক্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
বেইল-আউট কমিটি গঠন (২০০৯)
এমন দুর্বিষহ বিভীষিকাময় পরিবেশের মধ্য দিয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ঘুরে দাঁড়ানোর। প্রতিজ্ঞাবব্ধ হয় একঝাঁক তরুণ, উদ্যমী, সাহসী দায়িত্বশীল। গঠিত হয় বেইল-আউট কমিটি। জমির সাথে দায় সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং দায়-দেনার চাপ কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
এ সময় কেন্দ্রের প্রায় সকল কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। সার্বিকভাবে নেতৃত্ব ও নির্দেশনা শুণ্য হয়ে পড়ে যুবক পরিবার। এই দুর্বিষহ পরিস্থতিতে ভুক্তভোগী কর্মী ও সদস্যরা নিজেরা সংগঠিত হয়ে সদস্যদের পাওনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান রক্ষার দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় এই আন্দোলনে সর্বস্তরের কর্মী ও সদস্যরা যোগ দেয়। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে - জেলা প্রশাসক, থানা, প্রেসক্লাব ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জাতীয় প্রেসক্লাব, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনাসহ ৪০টি স্থানে সদস্যরা সমবেত হয়ে মানববন্ধন, র্যালী এবং প্রতিকী অনশন করে। ২০০৯-এর জুলাই মাসে দেশের ৬টি বিভাগ থেকে আগত প্রায় ২৫ হাজার ভুক্তভোগী সদস্য ও কর্মী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সচিবালয় হয়ে মুক্তাঙ্গনে সমবেত হয়। সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলে পথে কর্মীরা পুলিশি বাধা ও লাঠিচার্জের শিকার হন।
গণতন্ত্রের নবযাত্রা
নানান চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার নবযাত্রা শুরু হয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ২০০৯ সাল থেকে দায়শোধের কার্যক্রমকে আবারও বেগবান করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
তদন্ত কমিশন গঠন
২০১০ সালের প্রথম দিকে ৩টি মন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিনিধি সমন্বয়ে সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে যুবক সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধানের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।
২০১১ সালের প্রথম দিকে পুনরায় ২ সদস্য বিশিষ্ট একটি দীর্ঘমেয়াদী কমিশন গঠন করা হয়। বর্তমানে কমিশন তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পরিপালনে ও সদস্যদের পাওনা পরিশোধে
যুবক কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ
১. সোসাইটির নামে নতুন সদস্য বৃদ্ধি, শাখা বৃদ্ধি, ঋণ গ্রহণ ও ঋণ প্রদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়,
জুন ২০০৬ থেকে,
২. নিম্নোক্ত ৪টি প্রক্রিয়ায় সদস্যদের পাওনা পরিশোধ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে-
ক. নগদ টাকা প্রদানের মাধ্যমে
খ. হাউজিং প্লটের সাথে পাওনা সমন্বয় করে
গ. লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার প্রদানের মাধ্যমে পাওনা সমন্বয় করে
ঘ. প্রকল্প ঋণের বকেয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট সদস্যদের পাওনা সমন্বয় করে
যুবকের জন্ম
যুবক : সামাজিক বিনিয়োগের একটি অনন্য দৃষ্টান্ত
একটি বোধের তাড়নার ফসল- ‘যুবক’। ১৯৯৭ সালের আগস্টে শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের ৩য় তলায় ১৫০ বর্গ ফুটের একটি ছোট্ট কামরায় ৪টি কম্পিউটার নিয়ে একটি প্রশিক্ষণ সেন্টারের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠে যুবকের ভিত্তিভূমি।
যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি গত ১০ বছর (১৯৯৭-২০০৬) যাবত দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে গ্রুপভুক্ত সদস্যদের ক্ষুদ্রঋণ প্রদানের পাশাপাশি নানাবিধ প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। যুবক এ প্রক্রিয়ায় দেশে দক্ষ উদ্যেক্তা-জনশক্তি বিনির্মাণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। যুবক এর কার্যক্রম স্থানীয় নেতৃত্ব নির্ভর হওয়ায় স্থানীয় জনগণের সরাসরি সম্পৃক্ততায় দ্রুততম সময়ে দেশব্যাপী এর কার্যক্রম বিস্তার লাভ করে।
গত ২৪ মে’০৬ যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি এর ১টি কার্যক্রম বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক শো’কজ নোটিশ প্রদান করে। পরে উক্ত কার্যক্রম বন্ধ করে সদস্যদের বিনিয়োগ/পাওনা ফেরত প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করে। যদিও যুবক-এর কার্যক্রম সব সময় আইনগত বিধি-বিধান মেনেই পরিচালিত হয়েছে এবং যুবক-এর কার্যক্রম ব্যাংকিং ব্যবসার সংজ্ঞা বহির্ভুত, তথাপিও কেন্দ্রীয় ব্যংকের নির্দেশনাকে জনস্বার্থে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সদস্যদের স্বার্থ ও অধিকারকে প্রাধান্য দিয়ে এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ করে।
মানুষের প্রয়োজনকে কেন্দ্র করেই সামাজিক কার্যক্রম ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির বহুমুখি তৎপরতায় দ্রুত বিকশিত হয় ‘যুবক পরিবার’। এই নেটওয়ার্কে সম্পৃক্ত ৫০ হাজার কর্মী-পরিবারের প্রায় ৩ লাখ নির্ভরশীলের জীবন-জীবিকা। ৩ লাখের অধিক সদস্যের সঞ্চয় ও বিনিয়োগে গড়ে উঠে ৪২টি ছোট বড় বাণিজ্যিক প্রকল্প।
দেশীয় পুঁজিতে দেশীয় শিল্প : একটি নতুন ধারণা
যুবক মনে করে ভারতের সাহারা’র প্যারা-ব্যাংকিং ও রেসিডুয়ারি পদ্ধতির আদলে বাংলাদেশের মানুষের অলস সঞ্চয়কে যথাযথ বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করা ও দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। সমাজের স্বল্প ও মধ্যবিত্ত মানুষদের সংগঠিত করে তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পুঁজির সমন্বয়ের মাধ্যমে লাভজনক কর্মসংস্থান উদ্যোগ গড়ে তোলার এক অনবদ্য দৃষ্টান্ত এই যুবক।
যুবকের প্রতিশ্রুতি ও শ্লোগান
* আমাদের দেশ আমরাই গড়বো * আত্মনির্ভরশীলতায় জেগে উঠো বাংলাদেশ
* স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরাই গড়বো * দক্ষ জনশক্তিই সমৃদ্ধ বাংলাদেশের পূর্বশর্ত
* দিনে অন্তত: একবার বলুন, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি
সম্ভাবনাময় ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ
এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রচেষ্টা
যুবক-এর প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে আবাসন, মৎস্য, হ্যাচারি ও নার্সারী, শিক্ষা, চিকিৎসা, টেলিযোগাযোগ, পুঁজিবাজার, এগ্রো, পোল্ট্রি হ্যাচারি, রাবার বাগান, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার, আইটি, সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার, আরটিভি (টিভি চ্যানেল) পর্যটন ইত্যাদি খাতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে শত-সহস্র মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে। এছাড়াও নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ স্বাস্থ্যসেবা, টিকাদান, আয়মূলক কাজের প্রশিক্ষণসহ বিবিধ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে যুবকের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিলো লক্ষ্যণীয়।
এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ছিলো সম্ভাবনাময় লাভজনক বিনিয়োগ খাত ও কর্মসংস্থান সহায়ক। অধিকাংশ প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানের জন্ম ২০০৪ সাল ও পরবর্তী সময়ে। প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে ব্যবসায়িক পরিচালনার পুর্বেই বাধাগ্রস্ত হয়। যার ফলে এখন অনেক প্রতিষ্ঠানই বন্ধ, হাতছাড়া-বেদখল এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হতাশ হয়নি, পিছু হটেনি যুবক পরিবার
বরং সকল দায়-দেনা পরিশোধের কাজ অব্যাহত রেখেছে
শত প্রতিকূলতার পরও দায়শোধ কার্যক্রমে নিয়োজিত ও নিবেদিত রয়েছে যুবক পরিবার।
শত ভোগান্তি মোকাবিলা করে অবশেষে সমাধানের একটা টার্গেট
নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে যুবক। কমিশনের পরামর্শ ও নির্দেশনাকে আমলে নিয়ে দায়শোধ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০১৪ সালের মধ্যে দায়দেনার মাত্রা শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে,
ইনশা আল্লাহ্।
দায় পরিশোধের লক্ষ্যে
উত্তরণ কার্যক্রমের টার্গেট : ২০১০-১৪ ইং
এক. প্লট/ জমি প্রদানের মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ৯০০ কোটি টাকা
দুই : নগদ টাকা প্রদানের মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ১০০ কোটি টাকা
তিন : বাণিজ্যিক কোম্পানি এবং প্রকল্পগুলোর শেয়ার ও সম্পদ হস্তান্তরের
মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ৫০০ কোটি টাকা
২০১৪ সাল হবে দায়-দেনা মুক্ত যুবক-বর্ষ
ইনশা আল্লাহ। আমীন, আমীন, আমীন।।
www.jubokmembers.com
এই ওয়েব সাইটে রেজিষ্ট্রিপ্রাপ্ত ৪১২০ জন প্লট গ্রহিতার তালিকা এবং
পাওনার সম্পূর্ণ বা আংশিক পরিশোধ হয়েছে এমন পৌনে দুই লক্ষ সদস্যদের
তালিকা রয়েছে
মতামত, অভিযোগ এবং অনুসন্ধানের জন্য
ই-মেইল: jubok2014@yahoo.com, jubok1997.bd@gmail.com
Share on Facebook |
---|