লাখো মানুষের স্বপ্নের সম্মিলন

প্রতিহিংসার কালো থাবায় বিপর্যস্ত যুবক-এর দায়-দেনার পরিমাণ শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনার
লক্ষ্যে ২০১০-২০১৪ পাঁচ বছর ব্যাপি দায়-মুক্তির টার্গেট নির্ধারণ

উত্তরণ কার্যক্রম ২০১৩

 

একটি মানবিক আবেদন
বিবেকের দাবী

 

অনুগ্রহ নয় আবেগ নয়, বিবেকের কাছে দাবী . . . .

পার্থক্য এখানেই। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট থাকার কারণে প্রতিবেশী ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আদালত, সরকার এবং মিডিয়া ও জনগণ- সকলেই প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস না করে সংশোধন করার সুযোগ গ্রহণ করেছে। সংশোধনের জন্য শর্তারোপ করে, মনিটরিং বাড়িয়ে, শাসন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রকারান্তরে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীদের কল্যাণকেই বিবেচনায় অগ্রাধিকার দিয়েছে। এর বিপরীতে, প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করা ছাড়া আর কোন বিকল্প খুঁজে পান না আমাদের দেশের নীতি নির্ধারক, আমলা ও মিডিয়ার কর্তাবর্গরা। সাথে তাল মিলিয়ে জনগণের একটি অংশ একই ভাবে ধ্বংসাত্বক হয়ে ওঠে। ধ্বংস ছাড়া তারা আর কিছুই বুঝতে নারাজ। অথচ, প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হলে সবচেয়ে বেশী  ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ/ প্রান্তিক সদস্য।

দেশীয় আর্থ-সামাজিক একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বি-মাতা সুলভ আচরণ
২০০৬ সালের ২৪ মে তারিখে যুবক -এর একটি কার্যক্রমকে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগ এনে এক শো-ক’জ নোটিশ ইস্যূ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক কারন দর্শনোর নোটিশ দেয়ার প্রক্রিয়াটি যদিও মনিটরিং প্রক্রিয়ার একটি নিয়মিত ও সাধারণ বিষয়, কিন্তু যুবকের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নোটিশ ইস্যূর এই অতি-সাধারণ বিষয়টিকে মিডিয়ার হাতে তুলে দিয়ে যুবককে ইয়ালো-জার্নালিজমের বলির-পাঠা বানিয়েছে। বিষয়টি কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

যুবক একটি দেশীয় আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠান। ১০ বছর ধরে কাজ করা এই প্রতিষ্ঠানটি অচেনা-অজানা থাকার কথা নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে তবেই যুবকের নামে IFIC ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন নিয়েই যুবকের প্রতিনিধিগণ IFIC ব্যাংকের পরিচালকের পদ গ্রহণ করেছেন। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ও মনিটরিং সাপেক্ষে ঢাকা ব্যাংকের নেতৃত্বে আরব-বাংলাদেশ ব্যাংক সহ ৪-৫টি ব্যাংকের মাধ্যমে যুবক ফোনের নামে ১০০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে। Rtv টেলিভিশন চ্যানেলের ৫৭% মালিকানা গ্রহণ করা, টেলিফোন কোম্পানীর লাইসেন্স ক্রয় করা- এসবই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি ও অবগতির মধ্যেই হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোষাগারে নানান সরকারী বাধ্য-বাধকতার প্রয়োজনে প্রায় শতকোটি টাকা যুবক- এর নামে জমা দিতে হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে মোট ২টি ব্রোকারেজ হাউজ ক্রয় করা হয় এবং এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ছিল যুবকের স্বরব উপস্থিতি। এ ছাড়াও নিয়মিত ব্যাংক একাউন্টের লেন-দেনের মাত্রা হাজার কোটি টাকার বেশী ছিল। এ ছাড়াও, একজন ক্যাটালিষ্টের ভূমিকায় যুবক- এর উদ্যোগে আবাসন, মৎস্য হ্যাচারী ও নার্সারী এবং রপ্তানীর জন্য প্রক্রিয়াকরন, উচ্চ-শিক্ষা, চিকিৎসা, এগ্রো, পোল্ট্রি হ্যাচারী, রাবার বাগান, আইটি, সিরামিক, ফার্মাসিউটিক্যাল, পর্যটন, বিষমুক্ত কৃষি গবেষণাগার, ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টার -ইত্যাদি খাতে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ নিয়ে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠান গুলোর মাধ্যমে সহস্র-লাখো মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও জন-সচেতনতা, নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রাকৃতিক জন্ম-নিয়ন্ত্রন, শিশুর প্রতিভা বিকাশ সহ স্বাস্থ্য সেবা, টিকাদান, আয়মূলক কাজের প্রশিক্ষণ -ইত্যাদি জন-অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমে যুবকের প্রত্যক্ষ অবদান ছিল লক্ষ্যনীয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি শো’কজ নোটিশের ক্ষমতায় লন্ড-ভন্ড
লাখো মানুষের হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং ১০ বছরের সাধনা

দীর্ঘ ১০ বছরের যুবক প্রতিষ্ঠানটি এবং এর মাধ্যমে গড়ে উঠা কার্যক্রম গুলোর নিরাপত্তা, এর ভবিষ্যৎ পরিনতি, ৩ লাখের অধিক সদস্যের বিনিয়োগের নিরাপত্তা, হাজার-হাজার কর্মী, লাখো মানুষের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তার স্বার্থের কথা না ভেবেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক যুবককে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। পরিণতিতে, ধ্বংসের মুখে পড়ে সম্ভাবনাময় ও লাভজনক এবং কর্মসংস্থান সহায়ক অর্ধশত-প্রকল্প, বিপর্যস্ত হয় লাখো মানুষের বিনিয়োগ, আতঙ্ক ও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে কয়েক লাখ নির্ভরশীল মানুষ। হাজার মানুষের মনে প্রশ্ন, বাংলাদেশ ব্যাংক কী কারনে যুবকের বিরুদ্ধে এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করলো ? যুবকের বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল কী ? মানি লন্ডারিং, টাকা পাঁচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, তহবিল তছরুপ- তাহলে কী কোন অভিযোগ ছাড়াই বিশেষ উদ্দেশ্যে যুবককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। শুধু বলা হয়েছে, ‘অবৈধ ব্যাংকিং’। আজ এটা প্রমাণিত সত্য যে, কতিপয় অপরিনামদর্শীর চোখে যুবক অবৈধ ব্যাংকিং ও প্রতারণা করেছে, আইনের চোখে নয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ফাঁকির সংবাদের ভিত্তিতে যুবকের ১২/১৫টি প্রকল্প সরেজমিন তদন্ত করেছে। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে DGFI, দুর্নীতি দমন টাস্কফোর্স, দুর্নীতি দমন কমিশন সহ র্র্যাব-পুলিশ তদন্ত-তল্লাশীর কোনটিই বাদ দেয়নি। পরিচালকদের পরিবার, ভাই-বোন সহ নিকট-আত্মিয়দের সম্পদের তল্লাশী করতে ছাড়েনি।  ২০০৬ সাল পর্যন্ত মিডিয়াও ‘অবৈধ ব্যাংকিং’ শব্দটি ছাড়া অন্যকোন অভিযোগ তোলেনি।  বিপর্যস্ত হয়ে যুবক দায়-পরিশোধ করতে ব্যার্থ হবার পর যুক্ত হয়েছে ‘প্রতারণা’ শব্দটি। এ ছাড়া কোন অন্যায়, দুর্নীতি, আইনের খেলাফ, অবৈধ দখল, খাস জমি দখল কিংবা ব্যাংকের টাকা মারার মতো কোন অপরাধমূলক কাজের সাথে যুবককে জড়িত করার মত কিছু আবিষ্কার করা যায়নি। মিডিয়ায় বলা হয়েছিল, যুবক হায় হায় কোম্পানী, কিন্তু বিপর্যস্ত ৭ম বছরেও যুবক সব কিছু মিথ্যা প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে আছে। দায়-পরিশোধের কাজ করছে।

দৃঢ়তার সাথে এ কথা বলা যায় যে,
দুর্ভাগ্যজনক ১/১১ না এলে ‘যুবক’ ২০০৭ সালেই ঘুরে দাঁড়াবার মতো অবস্থায় চলে এসেছিল।

আমাদের দুর্ভাগ্য যে, কতিপয় অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যমূলক ও হিংসাত্মক আক্রমণ থেকে যুবকের নিরপরাধ, নিরীহ সাধারণ সদস্যদের আমরা রক্ষা করতে পারিনি। এটাও আমাদের ব্যর্থতা যে, এই নিরীহ নিরপরাধ মানুষগুলির শান্তি-সুখ বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনী বা অন্য কোন ব্যবস্থাও নিতে পারিনি। আসলে, যুবকের মতো একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের জন্য যা করার ছিল, আমরা তাই করেছি। অর্থাৎ আমরা রাষ্ট্রের নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ না করে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে মেনে নিয়েছি। যুবকের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারনে বহু মানুষের জীবনে নেমে আসে সীমাহীন কষ্ট, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা। তাদের জীবনের এই দু:খময় অধ্যায়ের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা জানি, প্রত্যয়ের সাথে বলতে পারি, আমরা নিরপরাধ, শুধুমাত্র ভুল বোঝাবুঝি এবং প্রতিহিংসার শিকারে পরিনত হয়েছি। আমরা জেনেশুনে কোন অন্যায় করিনি। আমাদের এই দুঃখ কষ্টের জন্য আমাদের কর্ম যতটা না দায়ী, আমাদের এবং সরকারের মধ্যে, আমাদের এবং সুশীল সমাজের মধ্যে, আমাদের এবং সাংবাদিক সমাজের মধ্যে কমিউনিকেশন গ্যাপটাই অনেক বেশি দায়ী। সদস্যদের এই অনাকাঙ্খিত দুঃখ-কষ্টের জন্য কোন শান্তনার ভাষা আমাদের নেই। তবুও দায়-বোধ থেকে শত-সীমাবদ্ধতা সত্বেও সদস্যের অংশবিশেষের পাশে দাঁড়াবার চেষ্টা করেছি। সকলের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল, কিন্তু দাঁড়াতে পারিনি, তাই  তাদের কাছে আমরা আন্তরিক ক্ষমাপ্রার্থী। প্রার্থনা করি, আল্লাহ আপনাদের দু:খ দুর করুন, সম্মানজনক জীবিকা অর্জনের তৌফিক দান করুন।

ভারতের সাহারা বনাম ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ভারতের ‘সাহারা ইন্ডিয়া পরিবার’কে সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০০৬ সালে অবৈধ লেন-দেনের দায়ে শো-ক’জ নোটিশ দেয় এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে কয়েক বছর ব্যাপি এক নির্দেশনা প্রদান করে। ২০০৬ সালে শো-ক’জ নোটিশ প্রাপ্ত সাহারা ২০১২ সালে বাংলাদেশে প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে সফরে আসে। আমাদের ক্রিকেটের পৃষ্ঠপোষকতার সুযোগ অর্জন করে। সৌভাগ্যবান Sahara Group এর বাঙ্গালী বাবু সুব্রত রায় আমাদের জনগণ, আমলা, মিডিয়া, মন্ত্রী এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নৈকট্য লাভেও ধন্য হয়েছেন।

এখানেই পার্থক্য। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট থাকার কারনে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক, আদালত, সরকার এবং মিডিয়া ও জনগণ- সকলেই প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস না করে সংশোধন করার সুযোগ গ্রহণ করেছে। সংশোধনের জন্য শর্তারোপ করেছে, মনটরিং বাড়িয়েছে, শাসন ও সহযোগিতার হাতও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রকারান্তরে তারা সর্ব-সাধারন বিনিয়োগকারীদের কল্যাণকেই বিবেচনায় অগ্রাধিকার দিয়েছে।

এর বিপরীতে, প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করা ছাড়া আর কোন বিকল্প উপায় খুঁজে পান না আমাদের সরকারী নীতি নির্ধারকরা। মিডিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে জনগনের একটি অংশ একই ভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করা ছাড়া আর কিছু বুঝতে নারাজ। অথচ প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হলে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারন সদস্যরা। পরিচালকরা ক্ষতি পুষিয়ে নেবার যোগ্যতা কাজে লাগাতে পারেন বলে বেঁচে যান। এই সত্যটি ভারতের নীতি নির্ধারকরা হয়তো বুঝেছেন বলেই তাদের নীতিও ভিন্নভাবে গ্রহণ করতে পেরেছেন। 
বিস্তারিত জানতে পড়ুন :  www.sahara.in প্রখ্যাত লেখক শংকরের বই- ‘বাঙালির বিত্ত সাধনা : সাহারার ইতিকথা’

ভারতের আরেক সৌভাগ্যবান, রিল্যায়েন্স গ্রুপের জনক ধীরুভাই আম্বানী
আজকের ভারতের ৩য় বৃহত্তম শক্তিশালী কোম্পানী রিল্যায়েন্স গ্রুপের জনক ধীরু ভাই আম্বানী আজ থেকে ৩০/৩৫ বছর আগে অনুরূপভাবে মিডিয়া এবং সরকারের শো-ক’জ আক্রমনের স্বীকার হয়ে ভয়ংকর ধ্বংস-স্ত্তপে পরিনত হয়। কমিশন, আদালত, মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে ৫-৬ বছর ব্যাপি কঠিন পরীক্ষার পর তিনি পুন:জীবন লাভ করেন। আজকের Air-tel এই রিল্যায়েন্স গ্রুপেরই একটি অংগ-প্রতিষ্ঠান। উপরোক্ত ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য নির্মিত হয় ‘গুরু’ নামক চলচ্চিত্র। ভারতীয়দের  দেশ ও দেশবাসীর জন্য ভালোবাসা ও দেশপ্রেমের জ্বলন্ত অনন্য উদাহরন ধীরু ভাই আম্বানীর Reliance Group ও বাঙ্গালী বাবু সুব্রত রায়ের Sahara Group, দেশপ্রেমী জনগণের দেশ ভারতে এরকম আরো দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে।
উপভোগ করন : বচ্চন পরিবারের অভিষেক-ঐশ্বরিয়া অভিনীত পুর্ণদৈর্ঘ্য ছবি গু
বিস্তারিত জানতে পড়ুন : www.relianceadagroup/www.ril.com/

হিংসা বা ক্ষোনয় বিবেক দিয়ে বিবেচনা করার দাবী
ঘটনার বিবরণ : ২০০৬ সালের ২৪ মে তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের শো-ক‘জ নোটিশ ইস্যূ করা হয়। তারপরের ৬ মাসে দায়ের বিপরীতে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা নগদ বিতরণ করা হয়।
২০০৭ সালে অস্বাভাবিক পন্থায় গঠিত হয় ১/১১ সরকার। সামরিক সমর্থিত এ সরকারের জরুরী অবস্থার নিষেধাজ্ঞায় যুবক
প্রতিষ্ঠানটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। মিটিং সিটিং বন্ধ হয়ে যায়। জনশক্তির সাথে, সদস্যদের সাথে যোগাযোগ থেমে যায়। 
মার্চ-এপ্রিলেই DGFI -এর দপ্তর থেকে ডাক আসে। DGFI -এর সদর দপ্তরে প্রায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল হাজিরা দিতে হয়। চেয়ারম্যান ও নির্বাহী পরিচালককে চোঁখ বেঁধে কালো গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। ৪২ দিন তারা নিখোঁজ ছিলেন। গোপন নির্যাতন সেলে আটকে রাখা হয়েছিল।

অভিযোগ তদন্তের নামে র্র্যাব-পুলিশের তল্লাশি শুরু হয়। জেলা/ থানা পর্যায়ের দায়িত্বশীলরাও তদন্ত থেকে বাদ পড়েনি। নানান গুজব ও আতংক ছড়াতে থাকে। এর সাথে ‘দুর্নীতি দমন টাস্কফোর্স’ যুক্ত হলে হামলা-মামলা আরো বেড়ে যায়। এ সংবাদে আতংক আরো বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারী সদস্যরা দিশেহারা হয়ে কর্মী-দায়িত্বশীলদের ঘেরাও, পাকড়াও, হামলা, মামলা শুরু করে। যুবক হাউজিংয়ের চেয়ারম্যান সহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হন। অফিসের পাশাপাশি বাসা-বাড়িও ভাংচুর-লুটপাট হয়। অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটে। কর্মকর্তারা অফিস খোলা রেখেই পালিয়ে যায়, এমন ঘটনাও ঘটে। এলাকা ছেড়ে পালানো এবং গা-ঢাকা দেয়ার ঘটনা বেড়ে যায়। DGFI, টাস্কফোর্স, বাংলাদেশ ব্যংক, NBR, পুলিশ-র্র্যাব মিলে টানা দুই বছর যুবককে নজরদারিতে-আটকে রাখে। তদন্তের নামে চলে ব্যাপক তথ্য-তল্লাশি ও হয়রানী।

যুবক বিষয়ক তদন্ত কমিশন গঠন
অতঃপর ২০০৯ সালে গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হলে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন-কে চেয়ারম্যান করে তিন মন্ত্রণালয়ের তিন জন যুগ্ম সচিব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্ণর সহ মোট পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিশন গঠণ করে। উক্ত কমিশন সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করে। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত কমিশন চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎকারে জানা যায় যে উক্ত কমিশন তাদের রিপোর্টে যুবকের দায়ের চাইতে সম্পদের পরিমাণ বেশী বলে মতামত দিয়েছেন। কমিশন চেয়ারম্যানের সাথে অনুষ্ঠিত যুবকের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মিটিংয়ে চেয়ারম্যান মহোদয় পজিটিভ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। তাঁর কয়েকটি মন্তব্য নিম্নরূপ-
ক. এতো ঘটনার পরও যুবকের নেতৃবৃন্দ পালিয়ে যায়নি এটা ইতিবাচক এবং প্রশংসাযোগ্য।
খ. টাকা সরিয়ে নেয়ার বা পাঁচার করার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ টাকা দেশেই আছে।
গ. জমিতে ব্যাপক বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্তটি যুবকের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন সিদ্ধান্ত ছিল। জমির মূল্য কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে, বিধায়
    দায় পরিশোধ করা সম্ভব হবে।
ঘ. প্রকৃতপক্ষে সরকার যুবকের কার্যক্রম বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এই কমিশন গঠন করেনি। 
ঙ. জমি-জমা বে-হাত/ হস্তান্তর যাতে না হয় সে বিষয়ে দৃষ্টি-আকর্ষন করে পত্রিকায় প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির ব্যাপারে তিনি বলেন,
    এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা খুব একটা নেই, এটা আমরা আমাদের তদন্তের স্বার্থে করেছি।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ২ বছর মেয়াদের জন্য ২ সদস্য বিশিষ্ট যুবক কমিশন গঠন
পত্রিকা মাধ্যমে জানা যায়, ১ম কমিশনের সুপারিশে এই ২য় কমিশন ২০১১ সালের মে মাসে কার্যক্রম শুরু করে। অবসরপ্রাপ্ত
যুগ্ম-সচিব জনাব রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান ও আইন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম-সচিব জনাব মজনুল আহসানকে সদস্য করে
২ সদস্য বিশিষ্ট কমিশন ২ বছরের জন্য গঠন করা হয়।

কমিশনের সহযোগী হয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে শুর থেকেই ‘যুবক’ ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা হয়।
কয়েকটি বিবরণ উল্লেখ করা হলো :
* কমিশন চেয়ারম্যান জনাব রফিকুল ইসলাম সাহেবের সাথে যুবক নেতৃবৃন্দ একাধিকবার সভায় মিলিত হন। কমিশনের দৃষ্টিভংগি
   এবং যুবকের উত্তরণ পরিকল্পনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
* সাক্ষাৎ যোগাযোগের সমস্যার কারনে ফোনে যোগাযোগ বেশী হয়। কোন কোন দিন ৫/৬ বার ফোনালাপ হয়।
* কমিশনের চাহিদা পরিপূরণের স্বার্থে কমিশন কার্যালয়ে প্রতিনিধি পাঠানো হয়।
* যুবক কমিশন দপ্তর থেকে ০৪.১০.২০১১ তারিখ প্রথম পত্র পাঠানো হয়। ৩০.০১.২০১৩ তারিখ পর্যন্ত ৭৮ টি প্রসঙ্গে
   মোট ৯১ টি পত্র কমিশন থেকে যুবককে প্রেরণ করা হয়। এর জবাবে যুবক দপ্তর থেকে চাহিদার আলোকে
   তথ্য-প্রতিবেদন-মতামত ইত্যাদি নিয়ে পত্র প্রেরণ করা হয় মোট ৮৮ টি।
যে সকল তথ্য-প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেয়া হয়েছে :
    ক. মাঠ ও ডেস্ক জনশক্তির ১১,০০০ জনের তালিকা; (নাম, পদবী, ফোন নং, ঠিকানা)     
    খ. জমি/ প্লট গ্রহিতা ৪,০০০ জনের তালিকা; (নাম, ঠিকানা, ফোন নং, প্রকল্পের নাম)
    গ. নগদ টাকা গ্রহনকারীর ৫০,০০০ জনের তালিকা; (নাম, ঠিকানা, ফোন নং, টাকার পরিমাণ, সংশ্লিষ্ট অফিস/ দায়িত্বশীল বিবরণ)
    ঘ. সমন্বয়কৃত ডীড-ডকুমেন্টেস-ধারী  ৩৮,০০০ জনের তালিকা; (নাম-ঠিকানা-ফোন-টাকার পরিমাণ-সংশ্লিষ্ট অফিস/ দায়িত্বশীল)
    ঙ. ১ম কমিশনে প্রেরিত সম্পদের তালিকা ও তালিকার বর্তমান অবস্থার বিবরণ;
    চ. সমস্যাগ্রস্ত সম্পদ উদ্ধার করার ও তা ব্যবহার করে দায়-মুক্ত হবার পরিকল্পনা;

যুবক কমিশন টীমের সরেজমিন তদন্ত-পরিদর্শন বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদান :
    ক. সাভার প্রকল্পের জমি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয় ২৬.০২.২০১২ তারিখ ;  খ. কাঁচপুর প্রকল্পের জমি সরেজমিন পরিদর্শন
    করা হয় ০৪.০৩.২০১২ তারিখ ; গ. চান্দেরচর ও চরপানিয়া প্রকল্পের জমি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয় ০৮.০৩.২০১২ তারিখ ;
    ঘ. ভালুকা প্রকল্পের জমি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয় ১৩.০৩.২০১২ তারিখ ;  ঙ. খুলনার হাউজিং জমি ও বাগেরহাটের হ্যাচারী;       চ. যুবক সিরামিক ও ইউনিক বুট প্রকল্প ;  ছ. রহমত মঞ্জিল ;  জ. যুবক এর বি.কে.টাওয়ার ;  ঝ. বরিশাল বিভাগে তদন্ত-পরিদর্শনের প্রস্ত্ততি নেয়ার পর তা স্থগিত হয়। পরে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বশীলদের ঢাকায় কমিশন দপ্তরে ডেকে আনা হয়।

মস্যাগ্রস্ত ইস্যূ গুলো সম্পর্কে কমিশনকে তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা চাওয়া হয়।
যদিও এসব আবেদনের পক্ষে কমিশনের কিছুই করার নেই বলে জানানো হয়।
. কতিপয় দুর্বৃত্ত খুলনায় ১৫ কোটি টাকা মুল্যের জমির জাল-দলিল করে দখলের চেষ্টা করে। শেষ মুহুর্তে জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা করা হয়।
. যুবক কমিশনের চিঠি দেখিয়ে ২০০০ শতক জমিতে নির্মিত বাগেরহাটের হ্যাচারী স্থানীয় UNO কর্তৃক দখলে নেয়। UNO কর্তৃক নিয়োজিত পাহারাদাররা হ্যাচারীর সবজী-ফল-মাছ জোর করে নিয়ে যায়। একই ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে কতিপয় বিক্ষুব্ধ যুবক-সদস্য হ্যাচারীর কর্মচারীদের বের করে দিয়ে নিজেরা হ্যাচারীর দখল নিয়ে নেয়। বর্তমানে তা পুণ:দখলে নেয়া হয়েছে।
. খুলনার ১০ কোটি টাকা মূল্যের বাড়িটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
. পুরানা পল্টনের ২০ শতক জমির উপর প্রস্তাবিত ২০ তলা বি.কে.টাওয়ারটি (অ-সমাপ্ত) নিয়ে মামলা চলছে।
. পুরানা পল্টন লেনে অবস্থিত ২২ শতক জমির বাজার মুল্য হবে ৫০-৫৫ কোটি টাকা। জমির ৩ তলা ভবনটি অতীশ দিপংকর বিশ্ববিদ্যালয়কে  ভাড়া দেয়া হয়। কমিশনের চিঠির উদ্বৃতি দিয়ে কম-বেশী ১ কোটি টাকার বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করতে অপারগতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিষ্ট্রার।
. ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ৮০% মালিকানা যুবকের। যুবকের নেতৃবৃন্দ জেলে আটক থাকাকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০% মালিকানার দাবীদার জনাব চিশতি অবৈধভাবে একক মালিকানার দাবীদার হয়ে ওঠেন।
. যুবক ফোন প্রকল্পে নিজস্ব ২৫০ কোটি এবং ব্যাংকের প্রায় ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নোটিশের পর ঢাকা ব্যাংক (লিড ব্যাংক) কর্তৃপক্ষ যুবকের ইমেজ সংকটের দোহাই দিয়ে ৩০০ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি (সব কিছু চুড়ান্ত থাকার পরও) স্বাক্ষর করতে বিলম্ব করে। পরবর্তীতে সিন্ডিকেশনের অংশীদাররা ঋণ চুক্তি থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। ঢাকা ব্যাংকের অদূরদর্শী ও খামখেয়ালিপূর্ণ  অব্যাংকিং সুলভ আচরণে নগদ অর্থ যোগানের অভাবে পুরো প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ে। বর্তমানে প্রকল্পটি মামলাধীন।
. বগুড়ায় ৪ কোটি টাকা মূল্যের জমি কতিপয় বিক্ষুব্ধ যুবক-সদস্য নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা  করা হয়েছে। স্থানীয় দায়িত্বশীল ও সদস্যদের সহযোগিতায় নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে।
. কতিপয় অ-সদস্য দুর্বৃত্ত নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় র্র্যাব-১০ এর পরিচালক জনাব কামাল সাহেবের প্রত্যক্ষ ভুমিকায় দলিল দাতা ৩ জনকে র্র্যাব  কার্যালয়ে ৭ দিন আটকে রাখে এবং জোর পুর্বক জালকুড়ির ২০ কোটি টাকা মুল্যের ৩০০ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। পরে এর বিরুদ্ধে যুবক মামলা করে। উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের অবশিষ্ট জমি পাওনাদার যুবক সদস্যদের নামে রেজিষ্ট্রি দিতে সাব-রেজিষ্টার কমিশনের দোহাই দিয়ে  অসম্মতি জানিয়েছেন। জমির খাজনাও গ্রহণ করা হচ্ছে না। স্থানীয় দায়িত্বশীল ও সদস্যদের সহযোগিতায় নিষ্পত্তির লক্ষ্যে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
. ভোলা নিবাসী সাবেক সচিব জনাব এম. মোকাম্মেল হক যুবকের কাছ থেকে ৭৩৪ শতাংশ জমির সম্পুর্ণ বিক্রয় মূল্য গ্রহন করার পর জমিটি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। জমির বাজার মুল্য হবে ৬-৭ কোটি টাকা। এই সাবেক সচিবকে উকিল নোটিশ দেয়া হয়েছে, মামলার জন্য প্রস্ত্ততি নেয়া হয়েছে।
. ভোলার উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মজনু মোল্লা, যুবকের কাছ থেকে মূল্য গ্রহন করার পর রেজিষ্ট্রি বায়না করেন কিন্তু সাফ-কবলা না দিয়ে জমিটি জোর পুর্বক দখল করে রেখেছেন। জমির বাজার মুল্য হবে ৭-৮ কোটি টাকা। এই উপজেলা চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন।
. তেজগাঁয়ের ৫০ শতক জমির বাজার মুল্য হবে ৬০-৬৫ কোটি টাকা। এই জমির ৪ তলা ভবনটির মাসিক প্রায় ২ লক্ষ টাকার ভাড়া পাওনাদার-যুবক-সদস্যদের নামে কতিপয় প্রভাবশালী জোর পুর্বক আদায় করছে।
. Rtv- এর ৫৭% এর মালিকানার সুবাদে এই খাতে যুবকের বিনিয়োগ ৩০.২ কোটি টাকা। ২০০৭ সালে DGFI যুবক পরিচালকদের নির্যাতন সেলে ৪২ দিন আটকে রাখে। এক পর্যায় জোর পুর্বক যুবকের শেয়ারগুলো ছিনিয়ে নেয়। পরে জানা যায়, তৎকালীন সেনা প্রধান জেনারেল মইন সাহেবের পক্ষ থেকে Rtv গিফট দেয়া হয় তাঁরই গ্রামবাসী এবং ঐ পরিবারের আর্থিক পৃষ্ঠপোষক বলে খ্যাত বেংগল প্লাষ্টিকের মালিককে। DGFI এর বর্তমান মহাপরিচালক মহোদয় (তৎকালীন পরিচালক) ২০০৮ সালের শেষে বেংগল প্লাষ্টিকের মালিক জনাব মোরশেদ আলমকে এবং তার ছেলে জনাব বাবলুকে ডেকে নিয়ে যুবকের শেয়ার যুবককে ফিরিয়ে দেবার জন্য চাপ দেন। জনাব মোরশেদ ও তাঁর ছেলে তখন স্বীকারোক্তি প্রদান করলেও পরে রাজনৈতিক ক্ষমতা দিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে সক্ষম হয়।
. বরিশালের মার্কেট ও জমি, ঝালকাঠির জমি- সব মিলিয়ে বাজার মূল্যের প্রায় ৬০-৭০ কোটি টাকার সম্পদ দখলমুক্ত করার মামলা-লড়াই চলছে। শক্তিশালী মধ্যস্থতাকারী খুঁজে পাওয়া গেলে নিরসন করা সম্ভব হবে।
. পাওনাদার-যুবক-সদস্যদের একাংশ কমিটি গঠন করে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সমাবেশ, মানব-বন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, ঘেরাও, স্মারকলিপি পেশ সহ মামলা ও হামলা করে। টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে ওই পুলিশের সহায়তায় কয়েকজন দায়িত্বশীলকে আটক করে, নির্যাতন করে। পাওনাদারদের পক্ষে আটক করে টাকা আদায়ের কাজে ওই অফিসের ও RAB হেড কোয়ার্টারের উর্ব্ধতন কর্মকর্তারা ভূমিকা রেখেছেন। Atn News টিভি চ্যানেলে ধারাবাহিক ভাবে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করা হয়, এমনকি চ্যানেলের ষ্টুডিওতে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের ডেকে নিয়ে দীর্ঘ টক-শো’র আয়োজন করা হয়। বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, এসব কাজে তারা যুবক কমিশনের পরামর্শ নিয়েছে।

দু:খজনক হলেও সত্যি যে,
২০১২ সালের পুরো সময় জুড়ে যুবক কমিশনের আচরন ছিল অযৌক্তিক ও অসংযত

২০১২ সালে অনেকবার মিডিয়ায় যুবকের বিরুদ্ধে নেতিবাচক বিবৃতি-বক্তৃতা দিয়েছে কমিশন। এর ফলে, নিজস্ব গতিতে চলমান দায়-দেনা পরিশোধের কাজগুলো থমকে যায়। উপরন্তু, মাননীয় মন্ত্রী, মন্ত্রনালয় সহ সরকারের বিভিন্ন সেক্টরে, জেলা প্রশাসক, UNO, উপজেলা চেয়ারম্যান, পুলিশের আই.জি সহ সকল সুপারের কাছে, RAB, SB, CID সহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে, এমনকি সাব-রেজিষ্টারদের কাছেও চলমান দায়-পরিশোধের কাজগুলোকে থামিয়ে দেয়ার জন্য যুবক কমিশনের পক্ষ থেকে পত্র পাঠানো হয়। যুবকের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের নামে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করার সুপারিশ করা হয়। যুবকের চলমান সকল কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে অনুরোধ পাঠানো হয়। কমিশনের চিঠির কারনে প্লট রেজিষ্ট্রির মাধ্যমে দায়-পরিশোধের কাজ প্রায়-বন্ধ হয়ে পড়ে। 

যুবক কমিশন কর্তৃক পাঠানো পত্রের দোহাই দিয়ে
সারাদেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও মামলাবাজি বৃদ্ধি পেয়েছে

কোটি কোটি টাকার সম্পদ এখন বেদখল হবার অপেক্ষায়। ক্ষতির পরিমান উপলব্ধি করার স্বার্থে উল্লেখযোগ্য কিছু বিবরণ তুলে ধরা হলো :
খুলনায় ১৫ কোটি টাকা মূল্যের জমির মামলায় কমিশনের চিঠির দোহাই দিয়ে পুলিশ কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কমিশনের চিঠির কপি দেখিয়ে ২০০০ শতক জমিতে নির্মিত বাগেরহাটের হ্যাচারী স্থানীয় ইউ.এন.ও কর্তৃক দখলে নেয়। ইউ.এন.ও কর্তৃক নিয়োজিত পাহারাদাররা হ্যাচারীর সবজী-ফল-মাছ জোর করে নিয়ে যায়।
খুলনার ১০ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ির মামলায় কমিশনের চিঠি পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
নারায়নগঞ্জের স্থানীয় RAB-১০ এর প্রত্যক্ষ ভূমিকায় জোর পূর্বক জালকুড়ি’র ২০ কোটি টাকা মূল্যের ৩০০ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে নেয়। অবশিষ্ট জমি প্রায় ৭০০ শতক জমি পাওনাদার যুবক সদস্যদের নামে রেজিষ্ট্রি দিতে সাব-রেজিষ্টার অসম্মতি জানিয়েছেন। কমিশনের দোহাই দিয়ে এই জমির খাজনাও গ্রহণ করছেন না।
ভোলার সাবেক সচিব জনাব এম. মোকাম্মেল হক এবং ভোলার উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব মজনু মোল্লা কমিশনের অবগতিতে আছেন বলে জানিয়েছেন।
পুরানা পল্টনের অ-সমাপ্ত বি.কে.টাওয়ার এ যুবক এর দপ্তর অবস্থিত। সারাদেশের সদস্যদের সাথে সংযোগ-যোগাযোগের স্বার্থে এই দপ্তরটি চালু রাখা আবশ্যক। কিন্তু, কমিশনের পত্র দেখিয়ে SB-এর জনৈক SI-এর নির্দেশে নভেম্বরে অফিসটি বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়।
তেজগাঁয়ের ৫০ শতক জমি, এর ৪ তলা ভবনটির মাসিক প্রায় ২ লক্ষ টাকার ভাড়া পাওনাদার-যুবক-সদস্যদের নামে কতিপয় প্রভাবশালী জোর পূর্বক আদায় করছে। কমিশনের চিঠির দোহাই দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন নীরবতা পালন করছে। 
পুরানা পল্টন লেনের জমির ৩ তলা ভবনটি অতীশ দিপংকর বিশ্ববিদ্যালয়’কে ভাড়া দেয়া হয়। কমিশনের চিঠির দোহাই দিয়ে কম-বেশী ১ কোটি টাকার বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করতে অপারগতা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিষ্ট্রার।
ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর ৮০% মালিকানার সুত্রে যুবকের বিনিয়োগ হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। যুবক কমিশনের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ৫ কোটি টাকার বিনিময়ে যুবককে সরে যাবার প্রস্তাব দেয়।
Rtv- এর ৫৭% এর মালিকানার সুবাদে এই খাতে যুবকের বিনিয়োগ ৩০.২ কোটি টাকা। সম্প্রতি জনাব মোরশেদ আলমের পক্ষ থেকে যুবক কমিশনের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে সমঝোতার প্রস্তাব দেয়া হয়।
উপরে বর্ণিত কারনে ২০১২ সালে জমি ক্রয় ও দায়ের বিপরীতে প্লট বিতরণ- উভয়ই প্রচন্ডভাবে বাঁধাগ্রস্ত হয়। জমির সাফ-কবলা দলিল হওয়া সত্বেও নামজারি/ নাম খারিজ ঝুলে আছে ১ বছর যাবৎ। আবেদন গ্রহণ করার পর রেজিষ্ট্রি দিতে না পারায়, রেজিঃকৃত প্লটের নামজারি করতে না পারায়- সদস্যদের মধ্যে নতুন করে হতাশা ও ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অথচ, ২০১০-২০১১ সালে চলমান হাউজিং প্রকল্পগুলোর পরিপূর্ণতার প্রয়োজনে প্রায় ১৬,০০০ শতাংশ জমি বায়না করা হয় এবং তন্মধ্যে ১১,৫০০ শতক জমি ক্রয় করা হয়। সম্পদ বিক্রীর টাকায় এসব জমি ক্রয় করা হয়। ২০১০-২০১১ সালে দায়ের বিপরীতে নতুন-পুরাতন মিলে ২৫,৫০০ শতক জমি বিতরণ করা হয়েছে।

উত্তরণ-১ এর ৩টি হাউজিং প্রকল্পে জমাকৃত আবেদন ছিল ৪৬২টি এবং সাফ-কবলা সম্পন্ন হয়েছে ৩৪০টি। বাকিগুলো আটকে আছে নাম-খারিজ জটিলতায়। ২০১২ সালে সারাদেশে সাফ-কবলা সম্পন্ন হয়েছে ৭০০টি প্লটের অথচ টার্গেট ছিল ২০০০টি এবং প্লট প্রদানের মাধ্যমে ২৫০ কোটি টাকার ডীড-সমন্বয়ের পরিকল্পনা থাকলেও, অর্জিত হয়েছে মাত্র ১০০ কোটি। প্লট রেজিষ্ট্রির কাজ তুলনামূলক বেশী হয়েছে ঢাকার বাইরে। উত্তরণ-২ সফল না হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। ফলে নগদ টাকা বিতরণ কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে।

আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকার পরও পরিকল্পনানুযায়ী দায়িত্ব পরিপালনের সুযোগ এবং কাজের ফলাফল দুটোই অর্জিত হয়নি। জনাব আ.মজিদের দায়িত্বভুক্ত চান্দেরচর প্রকল্প, জনাব বি.এম.নাজমুল হকের দায়িত্বভুক্ত চরপানিয়া প্রকল্প, জনাব জাকির হোসেন লিটুর দায়িত্বভুক্ত কুমারখুদা প্রকল্প, জনাব রেজার হ্যাচারী ও বাগের হাট প্রকল্প, জনাব মুক্তির রানীর হাট প্রকল্প, জনাব নুর হোসেইন জুয়েলের দায়িত্বভুক্ত মিতালী প্রকল্প, জনাব সিরাজ উদ্দিনের দায়িত্বভুক্ত সাভার প্রকল্প, জনাব নেয়ামুল হক রতনের ১টি প্রকল্প, জনাব মোসলেহউদ্দিনের দায়িত্বভুক্ত ২টি ও জনাব নেয়ামুল হক নান্নুর দায়িত্বভুক্ত ২টি প্রকল্প, ঢাকা দক্ষিণের কাঁচপুর প্রকল্প, জনাব হাবিবুলস্নাহ-মো.আলী-ওবায়েদের দায়িত্বভুক্ত জালকুড়ি ও মুন্সিগঞ্জ এর ৩টি প্রকল্প, ভোলার ৩টি প্রকল্প, বরিশালের ২টি প্রকল্প সহ প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দায় পরিশোধের কাজ কোথাও স্থবির, কোথাও ধীরগতি হয়ে পড়েছে। 

অপচেষ্টা, ঝুঁকি এবং প্রতিকূলতা সত্বেও যুবকের জনশক্তির একাংশ সক্রিয় ছিল
আশার কথা হলো, এতোসব অপচেষ্টা, ঝুঁকি এবং প্রতিকূলতা সত্বেও যুবকের জনশক্তির সক্রিয়-অংশ বসে থাকেনি। আটকে থাকা কিছু কিছু জটিলতা স্থানীয় উদ্যোগে ইতিমধ্যেই অবমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ২০১২ সালে ৭০০টি প্লট রেজিষ্ট্রি প্রদানের মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার দায় সমন্বয় করা হযেছে।

জমি-সম্পত্তির মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটির ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এ বছর যুবকের সাংগঠনিক অবকাঠামো পুন:র্গঠনের কাজও একধাপ এগিয়েছে। ভোলার জমি উদ্ধারে জনাব মোকাম্মেলের অপকীর্তি নিয়ে লিফলেট প্রচারণার পর উকিল নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। মামলার প্রস্ত্ততি নেয়া হয়েছে। বাগেরহাটের হ্যাচারী থেকে দখলদারদের ২ বার বিতাড়িত করা হয়েছে। বাদী কর্তৃক জমি-প্লট গ্রহণের ফলে কয়েকটি ফৌজদারী মামলার নিষ্পত্তি সম্পন্ন হয়েছে। চান্দেরচর, ভালুকা, রতনপুর, বারইয়ার হাট প্রকল্পের অনেক প্লট সরেজমিন বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। সাভার প্রকল্পের প্লট হস্তত্মর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০১৩ সালে ১০০০-১২০০ প্লট বুঝিয়ে দেয়া হবে। চরপানিয়ার জমির জটিলতা নিরসনের কাজ চলছে। বিভাগ-জেলা ভিত্তিক দায়-দেনার পরিমাণ নির্ধারণ করার পাশাপাশি পরিশোধের হিসাব আপ-টু-ডেট করার লক্ষ্যে বিভাগ-জেলা ভিত্তিক প্লট গ্রহিতা তালিকা, সমন্বয়কৃত ডীড-ডকুমেন্ট তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ কার্যকর করা হয়েছে।

উপরের আলোচনার মাধ্যমে কাউকে অভিযুক্ত করবার বা কাঠ গড়ায় দাড় করাবার মানসিকতা নিয়ে কোন বক্তব্য রাখা হয়নি। কথাগুলো বলা ও উপস্থাপন করা প্রয়োজন আমাদের আত্ম উপলব্ধির জন্য, প্রয়োজন ভবিষ্যত চলার পথকে সুনির্দিষ্ট করার জন্য, প্রয়োজন পক্ষ বিপক্ষের সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। কারন আমরা সবাই আমাদের দেশকে ভালোবাসি। দেশটা আমাদের সবার।
আমরা যদি অন্যায় করি, রাষ্ট্রের অধিকার আছে আমাদের বিচার করবার। সুতরাং কাউকে আইনের উর্দ্ধে ভাবার সুযোগ নেই।

নির্মম ও বিভৎস স্মৃতিচারন : প্রতিহিংসার কালো থাবায় বিপর্যস্ত যুবক

২০০৬ সালের ২৪ মে তারিখে যুবক -এর একটি কার্যক্রমকে অবৈধ ব্যাংকিংয়ের অভিযোগ এনে এক শো-ক’জ নোটিশ পাঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটাকে নিয়ে কতিপয় মিডিয়া হেলি-খেলায় মেতে ওঠে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সর্বত্র। যুবকের ক্ষুদ্রঋণ ও প্রকল্প-ঋণ কার্যক্রম সহ আর্থিক কার্যক্রম এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। মাঠে অনাদায়ী হিসাবে আটকে পড়ে প্রায় ১৬৪ কোটি টাকা। যুবক হাউজিং-এর প্লট গ্রহীতারা মাসিক কিস্তি বন্ধ করে দেয়। এত মাসিক ১০ কোটি টাকার কিস্তি আদায় বন্ধ হয়ে পড়ে। যুবক ফোনের মাসিক নিয়মিত আয় ৩.৫ কোটি টাকা বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান্য প্রকল্পগুলোর আরো প্রায় ৫ কোটি টাকার মাসিক আয় বন্ধ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার মাসিক যোগান বন্ধ হয়ে যায়। যুবক ফোন-এর ৩০০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায় এবং এর ফলে, ৪০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। লভ্যাংশ সহ ফেরত দিতে হবে- বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা মানতে যেয়ে ১,০০০ কোটি টাকার অতিরিক্ত দায় কাঁধে চেপে বসে। ৭০০-৭৫০ কোটি টাকার দায় বেড়ে দাঁড়ায় ২০০০ কোটি টাকায়। 

আইন শৃংখলা বাহিনীর ধর-পাকড় তল্লাশী বেড়ে যায় এবং এই আতংকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। তৎকালীন টাস্ক-ফোর্সের কতিপয় বিভ্রান্ত সামরিক কর্মকর্তার ইন্ধনে পাওনাদার সদস্যদের পক্ষ থেকে শতাধিক মামলা করা হয়। এ সময়ে বিভিন্ন অফিসে হামলা ও ভাংচুর হয়। অফিস থেকে কর্মকর্তাদের বের করে দিয়ে অফিস তালাবদ্ধ করে এবং ডকুমেন্টস লুটপাট করে। গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, ডিড, ডকুমেন্টস, মালামাল, কম্পিউটার ও সফটওয়্যার লুটপাট হয়। অগ্নিসংযোগও করা হয়। মামলা-হামলা ও গ্রেফতার-নির্যাতনের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আত্ম-গোপন করতে বাধ্য হয় শত-শত কর্মী। তথাকথিত ১/১১ আমলে DGFI এর কতিপয় কর্মকর্তার সহায়তায় কেড়ে নেয়া হয় যুবকের Rtv (আর.টি.ভি-র ৫৭% মালিকানা)।

এ সময়ে মড়ার উপর খাড়ার ঘায়ের মতো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ৫/৬টি পাওনাদার বিপথগামী গ্রুপ।
এরা পেশাদার চাঁদাবাজদের সহায়তায় হামলা-মামলা চালিয়ে দায়শোধ কার্যক্রমের গতি আরো শ্লথ করে দেয়।

গভীর সঙ্কটের মুখে উদ্বিগ্ন কর্মকর্তা ও দিশেহারা সদস্যদের এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পদক্ষেপ হিসেবে ২০০৮ সালে গঠন করা হয় মনিটরিং সেল। ৫৩/১ পুরানা পল্টন লেনস্থ রহমত মঞ্জিলে সেলের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করা হয়। প্রায় এক লাখ সদস্যের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়। পর্যায়ক্রমে আংশিক দায়শোধের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু একদল বিপথগামী সদস্য হামলা চালিয়ে এই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেয়। তথ্য-প্রমাণ সহ কম্পিউটার এবং মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। মারধর করে রক্তাক্ত কর্মকর্তাদের বের করে দেয়। এরই পরিনতিতে উক্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। আবারো সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ঘুরে দাঁড়ানোর। প্রতিজ্ঞাবব্ধ হয় একঝাঁক তরুণ, উদ্যমী, সাহসী যুবক। ২০০৯ সালে গঠিত হয় বেইল-আউট কমিটি। জমির সাথে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং এ সময়ে দায়-দেনার চাপ কিছুটা কমিয়ে আনতে সমর্থ হয়।

যুবক সদস্যদের পাওনা পরিশোধ সংক্রান্ত বিবরণ : এক নজরে

২০০৬ সালে যুবকের মোট দেনার পরিমান ছিল ৭০০-৭৫০ কোটি টাকা। লভ্যাংশ সহ পরিশোধ করতে হবে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা পালনের ফলে বিগত সময়ে কম-বেশী ১০০০ কোটি টাকা লভ্যাংশ যুক্ত হয়ে মোট দেনার পরিমাণ দাড়িয়েছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ কোটি টাকা (আনুমানিক)।
২০০৬ সালে যুবকের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ৮০০-৯০০ কোটি টাকা। বিগত সময়ে জমির মূল্য বৃদ্ধির ফলে সম্পদের মূল্যমান বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন। অন্যদিকে লুটপাট, দখল এবং ব্যবসা বন্ধ থাকার কারনে সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণও বিশাল অংকে দাড়িয়েছে। ইতোমধ্যে দায় পরিশোধ হয়েছে ৭০০-৭২৫ কোটি টাকা। (নগদ ২২৫ + ডীড/ডকুমেন্টস সমন্বয় ৫০০)
- ডিসেম্বর’০৬ পর্যন্ত নগদ টাকা পরিশোধ হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। ২০০৭ ও ০৮ সালে নগদ টাকা বিতরণ হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
- ২০০৮ সালের প্রায় পুরো সময়টা ছিল মারমুখি। ২০০৯ সালের শেষার্ধে জমির মাধ্যমে দায় পরিশোধের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। চলতি সময় পর্যন্ত ৫,০০০টি প্লট প্রদানের মাধ্যমে দায় শোধ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকার বেশী। ২০১০ সালে উত্তরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।

নিম্নোক্ত তথ্যগুলো ওয়েব সাইটে সংযুক্ত করা হয়েছে
ক. দায়ের বিপরীতে নগদ টাকা প্রাপ্ত ২ লক্ষ গ্রাহকের তালিকা ;  খ. দায়ের বিপরীতে ৪,৫০০ প্লট গ্রহীতার তালিকা ;
গ. দায়ের বিপরীতে সমন্বয়কৃত ৩৮,০০০ ডিড/ ডকুমেন্টস এর তালিকা
www.jubokmembers.com

দায়ের পরিমাণ শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে
২০১০-২০১৪ পাঁচ বছর মেয়াদী উত্তরণ কর্মসূচি :
ক. গত ৬/৭ বছরে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ব্যবসায়িকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ পরিচর্যার পর পাওনাদারদের আগ্রহী অংশের মধ্যে দায়ের বিপরীতে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় হস্তাত্মর করার কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট মুল্যমান হবে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা।
 
খ. দায়ের বিপরীতে নগদ টাকা বিতরণ করা হবে ১০০ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের মধ্যে নগদ ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারী ও ভুক্তভোগীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

গ. জমি প্রদানের মাধ্যমে দায় পরিশোধ করা হবে ৯০০-১,০০০ কোটি টাকা। এজন্য প্রয়োজন হবে ৬০/৬৫ হাজার শতক জমি। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে প্লট যোগ্য জমির পরিমাণ ছিল লক্ষাধিক। বিগত সময়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির পরও বর্তমানে নানান ভাবে ব্যবহারযোগ্য জমি/সম্পদ যা আছে তা প্রণিধানযোগ্য। তবে পূর্বের বায়নাকৃত জমির সাফ-কবলা সম্পন্ন করা, ক্রয়কৃত জমির সংলগ্ন জমি ক্রয় করা, মামলাধীন জমির মামলা নিষ্পত্তি করা এবং লুটপাট হওয়া জমি পুনরুদ্ধার করার কাজটি সফল হলে পরিকল্পনার পুরোটাই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। আরো উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের মধ্যে রেজিষ্ট্রিপ্রাপ্ত সকলের প্লট সরেজমিন বুঝিয়ে দেবার লক্ষ্যে কাজ অব্যাহত আছে। 

এক নজরে
এক: প্লট প্রদানের মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ৯০০ কোটি;  দুই: নগদ টাকা প্রদানের মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ১০০ কোটি;
তিন: কোম্পানীর শেয়ার ও সম্পদ হস্তান্তরের মাধ্যমে দায়-শোধ হবে ৫০০ কোটি টাকা।

বেঁচে থাকতে চাইলে পরিবর্তন আনতেই হবে
যুবকের একটি মাত্র কর্মসূচী ছাড়া অন্য কোন কর্মসূচী নিয়ে কারও কোন প্রশ্ন ছিলনা, এখনো নেই। তাহলে শুধু কি একটি কর্মসূচীর ত্রূটির কারনে বাকী সব কল্যাণকর কাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। যুবক এক সময় একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান ছিল, সময়ের বিবর্তনে আজ প্রতিহিংসার রোষানলে পতিত হয়েছে। বিগত ৭ বছরের নির্মম-দুঃখ কষ্টের স্মৃতি আমাদেরকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আমরা দূ:খটাকেই বেশী বেশী ভাবি। কিন্তু ২০০৬ সালের পূর্বের ৯ বছরের ইতিহাসের কথা আমরা বেমালুম ভুলে গেছি, সে সময়ের আনন্দময় অর্জন গুলোকে স্মরণ করে বর্তমান যন্ত্রণার ভার কমাতে চেষ্টা করতে পারি। আমরা আমাদের জীবন-যুদ্ধের সম্ভাবনাকে হতাশার অন্ধকারে ডুবিয়ে দিতে পারিনা। প্রতিটি দিন মানুষের জীবনে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে হাজির হয়।

দেশ ও জাতির কল্যাণে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে পারি।
পদ্মা সেতুসহ এ জাতীয় উন্নয়ন কার্যক্রমে সরকারের সহযোগী হয়ে জাতীয় অবদানের অংশীদার হতে পারি।

দায় পরিশোধের কোন বিকল্প নেই
দায় পরিশোধের কোন বিকল্প নেই। তাই শত বাঁধা, প্রতিকূলতা আর সংকট মোকাবেলা করে আমরা দায়মুক্ত হবার সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। সারাদেশে দায়শোধ কার্যক্রমের একটা টার্গেট নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে যুবক পরিবার। মহামান্য সরকারের সহযোগিতায় চলমান কার্যক্রমের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০১৪ সালের মধ্যে দায়-দেনার মাত্রা শুন্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। ইনশা আল্লাহ।

২০১৪ সাল হবে দায়-দেনা মুক্ত যুবক-বর্ষ। আমীন, আমীন।।

যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি
যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি কর্তৃক বি.কে. টাওয়ার, ৫৪ পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ থেকে প্রকাশিত ও প্রচারিত, ৩১ জানুয়ারী ২০১৩
Website : www.jubokmembers.com     e-mail : jubok1997.bd@gmail.com     Facebook : jubok2014@yahoo.com